Homeফিকশনওঁয়া | স্বকৃত নোমান

ওঁয়া | স্বকৃত নোমান

আসন্ন দুর্যোগে স্থাবর-জঙ্গম কাঁপছে। বাতাসের গতিবেগ ক্রমে বাড়ছে। বৃষ্টিরও। শিশুটিকে কোলে নিয়ে আমি বাতাস ঠেলতে ঠেলতে হাঁটতে থাকি। গন্তব্য তৈলাফাং মুড়ার পরিত্যক্ত গোরস্থান। নবজাতক শিশু। নাড়ি থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে, ওঁয়াও ওঁয়াও করে কাঁদছে। আমার মনে হচ্ছে কান্না নয়, মহাপ্রলয়ের সাইরেন বাজছে। ঝড়ের সঙ্গে আকাশও ডাকছে অবিরামÑগুড়গুড় গুড়ুম…গুড়গুড় গুড়ুম। যেন মহাদেব তার ডমরু বাজিয়ে চলেছেন, যেন তিনি প্রলয়নৃত্যে মেতে উঠেছেন। আমার হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে, বুক কাঁপছে। শিশুটি একেকবার আমার কোল থেকে পড়ে যেতে চাইছে। যেন সে বুঝতে পেরেছে আমি যে তাকে হত্যা করতে নিয়ে যাচ্ছি। আমি তাকে কাঁদতে দিই। কাঁদুক। কাঁদতে কাঁদতে গলার কাঁচা রগ ছিঁড়ে যাক, বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে দম আটকে মারা যাক। তাতে হত্যার পাপ কিছুটা হলেও কমবে।

ইচ্ছে করলে তাকে গলা টিপে মেরে এখানে, এই রাস্তার ধারে মাটিচাপা দিয়ে রাখতে পারি। কোদাল তো সঙ্গেই আছে, আমার কাঁধে ঝুলছে। কিংবা মেরে আশপাশের জঙ্গলে ফেলে দিয়ে চলে যেতে পারি। কিন্তু তাতে ঝুঁকি থেকে যাবে। এই পথ ধরে চাকমারা জুমপাহাড়ে যায়, কাঠুরেরা কাঠ কাটতে যায়। তাদের চোখে পড়ে যাবে লাশ। মাটিচাপা দিয়েও লাভ হবে না। গোরখোদক তুলে ফেলতে পারে। ঘটনা জানাজানি হয়ে যাবে তখন। পুলিশ আসবে। পোস্ট মর্টেমের জন্য লাশ নিয়ে যাবে। আমি ধরা পড়ে যাব। আমাকে রিমান্ডে নিলে আমি আপসুর নাম না বলে পারব না। তখন লাখ টাকা হাতছাড়া হয়ে যাবে, জেল-ফাঁসি হয়ে যাবে।

না, কোনো ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। আপসু যা বলেছে তাই করতে হবে। গলা টিপে মেরে তৈলাফাং মুড়ায় মুসলমানদের পরিত্যক্ত গোরস্থানে মাটিচাপা দিতে হবে। কেউ দেখবে না, কেউ জানবে না। সহজে কেউ যায় না ওদিকে। খল পাহাড়, গেলে অমঙ্গল হয়। আমার মঙ্গল-অমঙ্গলের চিন্তা নেই। পঞ্চাশ হাজার আগেই দিয়েছে আপসু, কাজ শেষ করলে বাকি পঞ্চাশ হাজার দেবে। তাতে আমার দুঃখ-দৈন্য ঘুঁচে যাবে। আহা, কতদিন পাঁঠার মাংস খাই না, কতদিন ভালো একটা শাড়ি পরি না, কতদিন এক প্লেট বিরিয়ানি খাই না। মাটিরাঙ্গা বাজারের কহিনূর হোটেলের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় প্রায়ই বিরিয়ানির গন্ধ পাই। আমার পেটটা তখন আলুটিলার গুহার সমান হয়ে ওঠে, যেখানে ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে কহিনূর হোটেলের সমস্ত বিরিয়ানি। তখন ইচ্ছে করে ঘটিবাটি সব বিক্রি করে দিয়ে হলেও এক প্লেট বিরিয়ানি খাই।

শিশুটি কেঁদেই চলেছে―ওঁয়াও…ওঁয়াও…ওঁয়াও। আমি বাড়িয়ে দিই হাঁটার গতি। হাঁটতে হাঁটতে টাকার অঙ্ক কষি। এক লাখ, পাক্কা এক লাখ টাকা। একসঙ্গে এত টাকা পেয়ে যাব আমি কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি। আমি দাই। আঁতুড়ঘরে প্রসবকাতর জননীর পেট থেকে যত্ন করে সন্তান বের করে আনা আমার কাজ। ক’টাকা পাই? একশ, দুইশ, বড়জোর পাঁচশ। এখন তো আমার ডাক পড়েই না। কেন পড়বে? খাগড়াছড়ি-মাটিরাঙ্গায় হাসপাতাল হয়েছে, অনেক ক্লিনিক হয়েছে। পেটে একটু ব্যথা উঠলেই সবাই ডাক্তারের কাছে ছোটে। ডাক্তার পেট কেটে বাচ্চা বের করে। এমনই এক দুষ্কালে আমি লাখ টাকার মালিক হতে চলেছি। দশ হাজার টাকায় ঘরের ভাঙা চালটা মেরামত করব, সাত হাজার টাকায় শম্ভুকে একটা সাইকেল কিনে দেব, ষোলশ টাকায় দুটি শাড়ি কিনব, পাঁচশ টাকায় খাগড়াছড়ি শহরে গিয়ে সিনেমা দেখব, তিনশ টাকায় দুই প্যাকেট বিরিয়ানি কিনে শম্ভুকে নিয়ে খাব।

ওঁয়াও…ওঁয়াও…ওঁয়াও—শিশুটির কান্না থামছেই না। না না, ঘরের চাল মেরামত করাব না, শম্ভুকে সাইকেল কিনে দেব না, শাড়ি কিনব না, সিনেমা দেখব না, বিরিয়ানিও খাব না। একটা টাকাও আমি খরচ করব না। সব টাকা রেখে দেব পোস্টাপিসে। আতরবিবি বলেছে পোস্টাপিসে টাকা রাখলে মাসে মাসে সুদ দেয়। লাখে এক হাজার। অনেক টাকা। গোটা মাস চালিয়ে নিতে পারব। আর করব না দাইয়ের কাজ।

ওঁয়াও…ওঁয়াও…ওঁয়াও—শিশুটি কেঁদেই চলেছে। বিজলির আলোয় একবার শিশুটির মুখটা দেখে নিই। কী সুন্দর, কী মায়াময়, কী নিষ্পাপ মুখ! ওঁয়াও…ওঁয়াও…ওঁয়াও। তুমি কেন আমাকে মারতে নিয়ে যাচ্ছ দাই? আমি তো এখনো একটিবার মাকে ছুঁয়ে দেখিনি, এখনো মায়ের মুখ দেখিনি, তার বুকের একটুখানি দুধও খাইনি। আমাকে কেন মারতে চাইছ দাই? ওঁয়াও…ওঁয়াও…ওঁয়াও। এই পৃথিবী কেমন, চন্দ্র-সূর্য কেমন, পাহাড়-অরণ্য কেমন, গরু-ছাগল কেমন, পাখপাখালি কেমন আমি তার কিছুই জানি না, আমি তার কিছুই দেখিনি। আমাকে মারতে চাইছ কেন দাই? ওঁয়াও…ওঁয়াও…ওঁয়াও। আমি তো এখনো একটা পিঁপড়া, একটা মশা, একটা মাছিকেও হত্যা করিনি। কেন আমাকে তুমি হত্যা করতে চাইছ দাই? কোন দোষে আমাকে মাটিচাপা দিতে নিয়ে যাচ্ছ? ওঁয়াও…ওঁয়াও…ওঁয়াও।

দুর্যোগের মুখোমুখি দাঁড়ানো এই ধরিত্রীর মতো আমি আবার কাঁপতে শুরু করি। আমার হাত কাঁপে, পা কাঁপে, বুক কাঁপে, সমস্ত শরীর কাঁপে। এতক্ষণে আমার মনে প্রশ্ন জাগে, আচ্ছা, আপসু কেন এই শিশুকে মারতে চাইছে? শিশুটি তো তার নাতি, ইরোজার পুত্র। ইরোজার বিয়ে হয়েছিল খানাটিলার মজিরের সঙ্গে। ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে কিছুদিন আগে। কতদিন আগে? এক বছর হতে পারে, দেড় বছরও হতে পারে। না না, দেড় বছর নয়, এক বছরও নয়, আরো কম। নয়-দশ মাস হতে পারে। ছাড়াছাড়ি হওয়ার দু-একদিন আগে নিশ্চয় গর্ভবতী হয়েছিল ইরোজা। নইলে তার পেটে সন্তান আসবে কোথা থেকে? এ নিশ্চয় মজিরের সন্তান। অন্য কারো হওয়ার কথা নয়। তেমন মেয়ে নয় ইরোজা। পর্দা-পুশিদার মধ্যে থাকা মেয়ে সে। সহজে বাড়ির বের হয় না, গ্রামের কেউ কখনো তাদের বাড়ি যায় না। আপসু হয়তো মেয়েকে আবার বিয়ে দিতে চায়। চায় বলেই শিশুটিকে মেরে ফেলতে চায়। সন্তান থাকলে ঝামেলা হবে, সহজে বিয়ে দিতে পারবে না।

আহা ইরোজা! সে জানে না তার সন্তানকে যে আমি হত্যা করতে চলেছি। আমি যখন আঁতুড়ঘর থেকে শিশুটিকে নিয়ে বের হচ্ছিলাম সে তখন বেহুঁশ। এতক্ষণে হয়তো হুঁশ ফিরেছে। নিশ্চয় সে তার সন্তানকে খুঁজছে। না পেয়ে চিৎকার করে কাঁদছে। এই ঝড়-বৃষ্টির রাতে কেউ শুনতে পাচ্ছে না তার কান্না। ঝড়-বৃষ্টি না হলেও কেউ শুনতে পেত না। তাদের বাড়িটা মীরাছড়ির উত্তরে, চুরুঙ্গি খালের কাছে। ওদিকে আর কোনো বাড়িঘর নেই। বুড়ো বয়সে বাপ দ্বিতীয় বিয়ে করায় রাগ করে আপসু বাড়ি ছাড়ে। খালের পাড়ে জঙ্গলা পরিষ্কার করে বাড়ি করে। ইরোজার বয়স যখন পাঁচ এবং সাক্কুর যখন দুই, সৌদি চলে গিয়েছিল আপসু। সাত বছর বিদেশ করার পর একদিন খবর পায় দুই সন্তানকে রেখে গয়নাগাটি আর নগদ আশি হাজার টাকা নিয়ে তার বউ উধাও। আপসু বাড়ি ফেরে। বউয়ের খোঁজ লাগায়। খুঁজতে খুঁজতে একদিন খবর পায় যে বত্তাখালির জিয়াউলের সঙ্গে ভেগে গেছে তার বউ। আপসু আবার বিয়ে করল, এক বিধবাকে, যার স্বামী সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে মরেছে। আপসু ভেবেছিল ভাগ্য এবার তার সহায় হবে। হলো না। একদিন মাটিরাঙ্গা থেকে ফেরার পথে ঠাটা পড়ে মারা গেল সাক্কু। তার কদিন পরেই ইরোজার ছাড়াছাড়ি। অকূল পাথারে কূল খুঁজে পায় না আপসু।

শিশুটি কেঁদেই চলেছে—ওঁয়াও…ওঁয়াও…ওঁয়াও। খুব পিয়াসা লেগেছে দাই। তোমার বুকের একটুখানি দুধ খেতে দেবে? ওঁয়াও…ওঁয়াও…ওঁয়াও। আমাকে মেরো না দাই। দেখ রাস্তার ধারে জঙ্গল। এই জঙ্গলে আমাকে ফেলে রেখে তুমি ফিরে যাও। আমি বেঁচে যাব, নিশ্চিত বেঁচে যাব। ওঁয়াও…ওঁয়াও…ওঁয়াও। মেরো না আমাকে দাই। একটা ভেলা বানিয়ে চুরুঙ্গি খালে ভাসিয়ে দাও। কেউ দেখবে না, কেউ জানবে না। আমি বেঁচে যাব, নিশ্চিত বেঁচে যাব।

আমার কান্না পায়, ভীষণ কান্না। ভাবি, আচ্ছা, শিশুটিকে চুরুঙ্গি খালে ফেলে দিলে কেমন হয়? স্রোতে ভেসে দূরে কোথাও চলে যাক। বেঁচে যেতেও তো পারে। না বাঁচুক, নিজ হাতে গলা টিপে তো মারতে হবে না। তাতে হত্যার দায় কিছুটা হলেও হালকা হবে। কিংবা কিছু ডালপালা জড়ো করে লতাপাতায় বেঁধে একটা ভেলা বানিয়ে ভাসিয়ে দিলে কেমন হয়? ভাসতে ভাসতে চলে যাক দূরে। বেঁচে থাকলেও থাকতে পারে। কাকে যেন এভাবে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল ভেলায়? শ্রীকৃষ্ণকে? না না, তাকে তো বসুদেব রেখে এসেছিলেন গোকুলে যশোদা-নন্দের ঘরে। তবে কাকে? আতরবিবি কার কিস্সা যেন বলেছিল? সেই যে রাজার ভয়ে এক শিশুপুত্রকে সিন্দুকে ভরে তার মা ভাসিয়ে দিয়েছিল নীল গাঙে। নীল গাঙ? গাঙের নাম কি নীল? আতরবিবি কি এই নামের কোনো গাঙের কথা বলেছিল? ঠিক মনে পড়ে না। আমার কেবলই মনে পড়ে শ্রীকৃষ্ণের কথা। শিশু কৃষ্ণকে তো এভাবেই হত্যা করতে চেয়েছিল দুরাচারী কংস। হরি হরি, ক্ষমা করো হরি। আমি বড় অসহায় হরি। জীবনে অনেক কষ্ট করেছি, দিনের পর দিন উপোস থেকেছি। একটি পাপ করে, কেবল একটি পাপের বদলে আমি লাখ টাকার মালিক হব, দূর হয়ে যাবে আমার সব দুঃখ-কষ্ট। ক্ষমা করো হরি।

শিশুটিকে গাছতলায় শুইয়ে আমি ডালপালা লতাপাতা জড়ো করতে থাকি। শিশুটি কেঁদেই চলেছেÑওঁয়াও…ওঁয়াও…ওঁয়াও। আমার হাত চলতে চাইছে না, পা চলতে চাইছে না। ভাবি, ভেলা তো বানাব, কিন্তু এই ভেলা নিয়ে চুরুঙ্গি খালে নামব কেমন করে? এদিকে তো খালের কোনো ঘাট নেই। চারদিকে জঙ্গল আর জঙ্গল। সাপ-বিচ্ছুর ভয়। থাক, এত ঝামেলার দরকার নেই। এই শিশুকে বাঁচাতে পারব না আমি। জঙ্গলে ফেলে গেলে শেয়ালে খাবে, ভেলায় ভাসিয়ে দিলে স্রোতে ডুবে যাবে, বাড়ি ফিরিয়ে নিলে আপসু মেরে ফেলবে। তার চেয়ে বরং আমিই মারি। এক লাখ টাকা, নগদ এক লাখ টাকা।

ওঁয়াও…ওঁয়াও…ওঁয়াও—শিশুটি কেঁদেই চলেছে। আমি আর সইতে পারি না তার কান্না। তার মুখটা চেপে ধরে ছুটতে থাকি। ছুটতে ছুটতে পরিত্যক্ত গোরস্থানের কোণায় এসে বিজলির আলোয় দেখি আমি এক গভীর খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে। আমার বুকটা ধক্ করে ওঠে। আবার বিজলি চমকায়। এবার দেখি, দূরে পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছে এক বিরাট বৃক্ষ। বৃক্ষ, না অন্য কিছু? বৃক্ষের কি হাত-পা থাকে? এই বৃক্ষের চারটি হাত। এক হাতে শঙ্খ, এক হাতে চক্র, এক হাতে গদা, আরেক হাতে পদ্ম। আমি চিৎকার করে উঠি। হরি হরি, আমার ভুল হয়ে গেছে হরি, আমায় ক্ষমা করো হরি। ভয়ে কাঁপতে থাকা আমার কোল থেকে ছিটকে পড়ে শিশুটি। গড়াগড়ি খেতে খেতে পড়ে যেতে থাকে পাহাড়ের গভীর খাদে। ধীরে ধীরে মিলিয়ে যেতে থাকে তার ক্রন্দনধ্বনি―ওঁয়াও…ওঁয়াও…য়াওঁ…ওঁ…ওঁ…ওঁ…ॐ…ॐ…।

আমি ছুট দিই মীরাছড়ির দিকে। বাতাসের গতিবেগ আরো বেড়েছে। বৃষ্টির গতিও। ঝড়-বৃষ্টি ঠেলতে ঠেলতে আমি আপসুর ঘরের বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াই। ভেতর থেকে ভেসে আসছে ইরোজার কান্না। আপসুর বউ আপসুকে গালাগালি করছে এবং মনে হচ্ছে আপসুকে সে মারছে। মারারই কথা। মহাপাপ করেছে আপসু। আমাকে করেছে মহাপাপী। আমি কান পাতি দরজার ফাঁকে। আপসুর বউয়ের কথাবার্তায় আমার খটকা লাগে। আমি নিশ্চিত হই শিশুটি যে মজিরের নয়। তবে কার? কার সঙ্গে গোপন সম্পর্ক ছিল ইরোজার? কাউকে তো কখনো এ বাড়িতে আসতে দেখিনি! দরজায় টোকা দিয়ে আমি আপসুকে ডাক দিই।

বাসন্তী?

হ্যাঁ।

আপসু দরজা খুলে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়।

কেউ দেখেনি তো?

না।

গর্ত ভালো করে খুঁড়েছিস তো?

হ্যাঁ।

মাটি ভালো করে দিয়েছিস তো?

হ্যাঁ।

এই নে বাকি পঞ্চাশ হাজার। খবরদার, একদম মুখ খুলবি না।

টাকার বান্ডিলটা আমি পলিথিনের ঠোঙায় মুড়িয়ে নিই। আপসু ভেতরের দিকে পা বাড়ায়। আমি তার কাঁধে হাত রাখি। আপসু চমকে ওঠে।

একটা সত্যি কথা কইবা দাদা? কখনো কাউরে কমু না।

বল।

এই পোলা কার? কে তার বাপ? মজির, না অন্য কেউ?

আমি ভেবেছিলাম আপসু বলবে, তবে আর কার? আমার মেয়েকে পোয়াতি করে হারামজাদা তালাক দিয়েছে। ভেবেছিলাম গ্রামের অন্য কোনো লোকের কথা বলবে, যে রাতের অন্ধকারে এ বাড়িতে আসত।

কিন্তু না, অনিচ্ছা সত্ত্বেও আপসুর মুখ ফসকে বেরিয়ে আসে গভীর গোপন সত্য, খবরদার, কাউরে কবি না। আমার, এই পোলা আমার।

 

 

Author

RELATED ARTICLES
- Advertisment -spot_img

Most Popular